img

অপরাজেয় বাংলা নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে দলটির আত্মপ্রকাশ হয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দারকে চেয়ারপারসন করে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও উপজাতিসহ ১৯৭১ ও ২০২৪-এর চেতনায় এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বে অর্জনকারী ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়েছে। 

এতে রয়েছেন ১১ সদস্যের ভাইস চেয়ারম্যান পরিষদ, ২৪ সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং ৭১ সদস্যবিশিষ্ট সেন্ট্রাল এক্সিকিউটিভ কমিটি। এই কমিটিতে ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বন্দর ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যুক্ত রয়েছেন। 

দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন- নবগঠিত দলের ভাইস চেয়ারম্যান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত গ্ৰুপ ক্যাপ্টেন ফরিদ উদ্দিন, জনেন্দ্র নাথ সরকার, মো. মোসাদ্দেক, ষ্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, একে এসব বি মজুমদার, মীর মুস্তাফিজুর রহমান, গোলাম রহমান, তানজুম আফরোজ আঁখি প্রমুখ। 

বক্তারা বলেন, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, উদ্দীপ্ত ৭১-এর স্বাধীনতার পতাকা হাতে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশ আজ এমন এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে, যেখানে সঠিক বিদেশি বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বে নেক্সট ১১ অর্থনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার বাস্তব সুযোগ রয়েছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০৩০-৩১ অর্থবছরের মধ্যে মূলত যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য,পরিবেশ ও সামরিক খাতে ৩১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট জিও নেশন হিসেবে গড়ে তোলার অভীষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই অপরাজেয় বাংলার আত্মপ্রকাশ। 

পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় বৃহত্তম এই ব-দ্বীপ, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ফুসফুস সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা, মহাকাশ শিক্ষা ও মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ে একটি মহাকাশ কেন্দ্র স্থাপন, ব্লু ইকোনমি এবং ভারসাম্যমূলক ডিফেন্স ডক্ট্রিন প্রণয়নে দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়েই গড়ে উঠেছে অপরাজেয় বাংলা। 

অনুষ্ঠানে অপরাজেয় বাংলার ভাইস চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. ফরিদ উদ্দিন (অব.) একটি সুস্পষ্ট রোড ম্যাপ তুলে ধরেন।

দলটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করা। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। জুলাই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙক্ষাকে ধারণ করে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। গ্রামীণ জনপদের উন্নয়ন ও শিল্পায়ন কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং সামগ্রিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। অগ্রাধিকারভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে সুষম অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা, যাতে সকল নাগরিকের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থানের চাহিদা পূরণের সুযোগ নিশ্চিত হয়। 

সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশি জনগণের ধর্ম ইসলাম এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর জন্য ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করে মানবিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ করা; অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা সম্প্রসারণ ও জাতীয় জীবনে তাদের অধিকতর সুবিধা ও সম্মানজনক অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা। নারী ও যুব সম্প্রদায়সহ সকল মানবসম্পদের সুষ্ঠু, কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব, প্রীতি ও সমতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করা; প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে পারস্পরিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান বজায় রেখে এবং বিশেষভাবে ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলা।

মুক্তবাজার অর্থনীতি, বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং বাস্তবমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধন করে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন করা। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বব্যবস্থা, বিশেষ করে আঞ্চলিক ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায়, বাংলাদেশকে ভারসাম্যপূর্ণ, প্রতিযোগিতামূলক ও সক্ষম কূটনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা মতবাদ পূর্ণাঙ্গ করার মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠন করা। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ, আধিপত্যবাদ ও বহিঃআক্রমণ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

এই বিভাগের আরও খবর